Islamer Bani

যে কারণে রোজা ভঙ্গ হয় | রোজা ভাঙার কারণ কয়টি |রোজা মাকরূহ হওয়ার কারন কি কি

যে কারণে রোজা ভঙ্গ হয় | রোজা ভাঙার কারণ কয়টি |রোজা মাকরূহ হওয়ার কারন কি কি


আসছালামু আলাইকুম  প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা পবিত্র রমজান মাসে আমাদের জন্য রোজাকে ফরজ করা হয়েছে। এই ফরজ রোজা রাখতে গিয়ে অনেক কিছু করলে রোজা ভেঙ্গে যায় আবার অনেক সময় রোজা মকরুহ হয়। তাই এই পোস্টে আমরা যে কারনে রোজা ভঙ্গ হয়, রোজা ভাঙ্গার কারন কয়টি এবং রোজা মকরুহ হওয়ার কারন কি কি এই পোস্টে উল্লেখ করা হবে।

যে কারণে রোজা ভঙ্গ হয় | রোজা ভাঙার কারণ কয়টি |রোজা মাকরূহ হওয়ার কারন কি কি


পবিত্র রমজান মাস যে মাসে আল্লাহ তায়ালা বান্দার সমস্ত গোনাহ সমুহ মাফ করে থাকেন। এই পবিত্র মাসে এমন কিছু কাজ আছে যে গুলো করলে আমাদের রোজা ভেঙ্গে যায় ।আবার এমন কিছু কাজ আছে যে গুলো করলে রোজা ভাঙ্গবে না কিন্তু সাওয়াব কম হবে যাকে মাকরূহ বলা হয়। তাই এই বিষয় গুলো জানা আমাদের জন্য আবশ্যক। নিম্নে ধারাবাহিক ভাবে রোজা ভঙ্গের কারন সমূহ ও রোজা মাকরূহ হওয়ার কারন সমুহ ধারাবাহিক ভাবে বর্ননা করা হলো।    

 রোজা ভঙ্গের কারন সমুহ|যে কারনে রোজা ভঙ্গ হয়


১. ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
২. জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে ।
৩. ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
৪. কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
৫. নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা কানে ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
৬. স্ত্রী সহবাস করলে ।
৭.কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)।
৮. ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
৯. দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।
১০. কোন স্ত্রীলোক যদি অজ্ঞান থাকে আর এই অবস্তা কেউ সহবাস করে তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
এমতাবস্থায় মহিলার কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু পুরুষের কাফফারা ও ওয়াজিব হবে।
১১. সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
১২. রাত্রি আছে মনে করে সোবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।
১৩. মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে ।
১৪. ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে।
১৫. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর নিদ্রা হতে জাগরিত হওয়া এ অবস্থায় শুধু কাজা ওয়াজিব হবে।
আর যদি রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে স্বামী-স্ত্রী সহবাস অথবা পানাহার করে তবে কাজা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। কাফফারার মাসআলা অভিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের থেকে জেনে নেবে।

রোজা মাকরূহ হওয়ার কারন সমুহ

১ . ক ) মিথ্যা বলা ।
( খ ) মিথ্যা সাক্ষি দেওয়া ।
( গ ) গিবত করা বা দোষচর্চায় লিপ্ত থাকা ।
( ঘ ) মিথ্যা কছম করা ।
( ঙ ) অশ্লীল কথা বলা বা অশ্লীল কাজ করা ।
( চ ) জুলুম করা ।
( ছ ) কারাে সঙ্গে শত্রুতা  রাখা ।
( জ ) পরনারীর প্রতি দৃষ্টি করা , তাদের সঙ্গে মেলামেশা করা ।
( ঝ ) সিনেমা দেখা — সবই নাজায়েজ । উপরােক্ত কাজ ছাড়া সব গােনাহর কাজ থেকে বিরত থাকা একান্ত জরুরি । এসব কারণে রােজা ভঙ্গ হয় না , তবে মাকরুহ হয় । অবশ্য সওয়াব কম হয় । ( জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : খ . ১ , পৃ . ২২ ; জাওয়াহিরুল ফিকহ : খ . ১ , পৃ . ৩৭৯ ; বুখারি , হাদিস নম্বর ১৯০৩ ) ।

২ . কোনােরূপ অপারগতা ছাড়াই কোনাে বস্তু আস্বাদন করা বা চর্বণ করা । ( শামি : খ . ৩ , পৃ . ৩৯৫ ) ।
৩ . অনন্যোপায় ছাড়াই কোনাে কিছু চর্বণ করে শিশুর মুখে দেওয়া । ( ফাতহুল কাদির : খ . ২ , পৃ . ৩৪৯ )
৪ . একান্ত প্রয়ােজন ছাড়া কেনাবেচার সময় মধু কিংবা তেলের স্বাদ আস্বাদন করা । l ( আলমগিরি : খ . ১ , পৃ . ১৯৯ )

৫ . সঙ্গম বা বীর্যপাতের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীকে চুমু দেওয়া । ( আলমগিরি : খ . ১ , পৃ . ২০০ )
৬ . মুখে অধিক পরিমাণ থুতু একত্র করে গিলে ফেলা । ( বিনায়াহ : খ . ৪ , পৃ . ২৯৪ ) ।
৭ . বেশি ক্ষুধা বা পিপাসার কারণে অস্থিরতা প্রকাশ করা । ( শামি : খ . ৩ , পৃ . ৪০০ )

৮ .মাজন , কয়লা , গুল , টুথপেস্ট ব্যবহার করা । ( জাওয়াহিরুল ফিকহ : খ . ১ , পৃ . ৩৭৯ )
 ৯ . অহংকারের জন্য সুরমা লাগানাে বা গোঁফে তেল লাগানাে । ( আলমগিরি )
১০ . পায়খানার রাস্তায় পানি দ্বারা এত বেশি ধৌত করা যে ভেতরে পানি চলে যাওয়ার আশঙ্কা হয় । ( আলমগিরি : খ . ১ , পৃ . ১১৯ )

১১ . ক্ষতির আশঙ্কা হলে শ্রমিকের জন্য মালিকের অনুমতি ছাড়া রােজা রাখা ।
১২ . প্রয়ােজন ছাড়া ডাক্তারের মাধ্যমে দাঁত তােলা মাকরুহ । তাতে যদি রক্ত বা দাঁতে লাগানাে ওষুধ । পেটে চলে যায় , যা থুতুর সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয় , তাহলে রােজা ভেঙে যাবে । ( আহসানুল ফাতাওয়া : খ . ৪ , পৃ . ৪২৬ )

১৩ . এমন কোনাে কর্ম করা , যা শরীরকে দুর্বলতার দিকে নিয়ে যায় , তা মাকরুহ ।  ( শামি : খ . ৩ , পৃ . ৪০০ )
১৪ . রােজাদারের জন্য অজু ছাড়া কুলি করা মাকরুহ । ( আল – ওয়াল ওয়ালিযিয়্যাহ : খ . ১ , পৃ . ২২৭ ) ।

যদি উপরে উল্লেখিত রোজা ভঙ্গের কারন ও রোজা মাকরূহ হওয়ার কারন সমুহ থেকে কোন জায়গায় কোন ভূল পেয়ে থাকেন তাহলে দয়া করে অবশ্যই আমাকে কমেন্ট করে জানাবেন।সবাই ভালো থাকুন। আর আল্লাহ যেনো আমাদের সবাইকে রমজান মাসের সমস্ত রোজা সঠিক ভাবে রাখার তাওফিক দান করেন। আমিন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button