গত ২৩ মাসে জালিয়াতি করে রপ্তানি বেশি দেখানো হয় ২৬ বিলিয়ন ডলার (গুরুত্বপূর্ণ খবর)
২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রকৃত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে ৪০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। সরকারি সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সর্বশেষ গত মে মাস পর্যন্ত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি ২৩ মাসে রপ্তানি দেখিয়েছিল ১০৭ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার। প্রকৃতপক্ষে রপ্তানি হয় ৮০ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। এর মানে ২৩ মাসে রপ্তানি বেশি দেখানো হয় ২৬ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার।
আইএমএফের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক গত এপ্রিলে মাসভিত্তিক প্রকৃত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ শুরু করে। প্রকৃত রপ্তানির সঙ্গে ইপিবির তথ্যে বড় ধরনের গড়মিল দেখা যায়। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে সংস্থাটি। এর পর থেকে রপ্তানি তথ্য প্রকাশ বন্ধ রেখেছে ইপিবি। সাধারণত সংস্থাটি প্রতি মাস শেষ হওয়ার পরবর্তী সপ্তাহে তথ্য প্রকাশ করে। জুলাইয়ের পর আগস্ট মাস শেষ হতে চললেও এখনও জুনের তথ্য প্রকাশ করেনি ইপিবি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৮১ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকৃত রপ্তানি ছিল ৪ হাজার ৩৩৬ কোটি ডলার। এর মানে গত অর্থবছর রপ্তানি কমেছে ২৫৫ কোটি ডলার বা ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। ইপিবি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের রপ্তানি দেখিয়েছিল। এর মানে ইপিবি বেশি দেখিয়েছিল ১২ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের মে পর্যন্ত সংস্থাটি ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ডলারের রপ্তানি দেখিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে গত মে পর্যন্ত রপ্তানি হয় ৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ডলার। এর মানে গত অর্থবছরের ১১ মাসে বেশি দেখানো হয় ১৪ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এতদিন একই রপ্তানি একাধিকবার হিসাব করা, শিপমেন্ট বাতিল হলেও তা রপ্তানির তালিকা থেকে বাদ না দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে রপ্তানি বেশি দেখানো হচ্ছিল। এর পর বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের সব হিসাব ওলট-পালট হয়ে গেছে।
রপ্তানির প্রকৃত তথ্য প্রকাশের ফলে গত অর্থবছর বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। যদিও গত মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি দেখানো হয়েছিল। প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব করার ফলে গত অর্থবছর চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার।
গত মার্চ পর্যন্ত যেখানে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত দেখানো হয় ৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। আর্থিক হিসাবে আসলে ৪ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে। গত মার্চ পর্যন্ত যেখানে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি দেখানো হয় ৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য সামগ্রিক ঘাটতির হিসাবে তেমন কোনো হেরফের হয়নি। গত অর্থবছর এ ক্ষেত্রে ৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি হয়েছে।