আমরা আজীবন লড়াই করবো সে পরিপূর্ণ বিজয়ের জন্য: মাহফুজ (গুরুত্বপূর্ণ খবর)
আমরা আজীবন লড়াই করবো সে পরিপূর্ণ বিজয়ের জন্য বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, একজন বলছিলেন যদি রাজনৈতিক শক্তি আকারে সংঘটিত হয়ে নির্দিষ্ট রূপকল্পের ভিত্তিতে এ গণ-অভ্যুত্থান হত। তাহলে এটা বিপ্লবী সরকারে গিয়ে ঠেকত! ফলত এখানে মাস্টারমাইন্ড জাতীয় কিছু নেই। হইলে আমরাই খুশি হইতাম এবং ঘোষণা দিয়ে সরকার গঠন করে নিজেদের জানান দিতাম। কিন্তু আমরা আজীবন লড়াই করব—সে পরিপূর্ণ বিজয়ের জন্য। সেদিন এ মুকুট আমরা নিজেরাই ধারণ করব। অদ্য নয়!
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে দেয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজন কারা—এমন প্রশ্নকে সামনে রেখে ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেছেন, নির্দিষ্ট করে বললে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিক অংশ। এ নাগরিক বা জনতা যদি বলতে চান- তাদের রূপ আর রঙ বহুত। সব শ্রেণি পেশার দল-মতের লোকেরাই এ অভ্যুত্থানের অংশীজন। এখনই কাউকে বড় করে তোলা কিংবা কাউকে খাটো করে দেখার সময় নয়।
তিনি বলেন, কিন্তু মনে রাখতে হবে এ গণ অভ্যুত্থানের গাঁথুনিতে আছে আন্দোলনের সমন্বয়কেরা এবং আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের পূর্বেকার অভিজ্ঞতাপ্রসূত চিন্তা। সে চিন্তা সামষ্টিক কেবল নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা সেটার প্রতিনিধিত্ব করছেন। এতটুকু বুঝেন। আন্দোলন ছিল ভ্যানগার্ড পার্টির মতন-এ কথাটাও বুঝেন।
মাহফুজ আব্দুল্লাহ বলেন, বাঙালি ভক্তি অথবা ঘৃণার মাঝামাঝি থাকতে চায় না বোধহয়। Idea বা চিন্তার বদলে Idolization কি ক্ষতিকর, আমরা বিগত ফ্যাসিবাদে দেখেছি। ফলে, চিন্তা নিয়ে কথা বললে ব্যক্তি কম গুরুত্ব পাবে এবং চিন্তাকে কেন্দ্র করেই বিতর্ক চলবে। এর মাধ্যমেই একটা সৃজনশীল রূপান্তর সম্ভব। সবাই এর মাধ্যমেই উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই এত দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের ভেতরে গড়ে ওঠা সব চিন্তাকে প্রতিনিধিত্ব করতে। সেটা দুরূহ কাজ। কিন্তু, এরকম না হলে পুরাতন ইডিও লজিকাল ফ্যাসাদে আমরা খাবি খাব। আর, সবাই নিজস্ব খোপে বেহুদা তর্কে ও ব্যক্তি আক্রমণে নিজেদের ক্লান্ত করে তুলবেন।
গণ-অভ্যুত্থান ব্যাখ্যার স্বাধীনতা সবার আছে উল্লেখ করে মাহফুজ আব্দুল্লাহ বলেন, সেটাই কাম্য। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের ভেতরকার চিন্তাগত ডিনামিজম যে গুটিকয় জানবেন, সেটা তো অস্বাভাবিক না। এ গুটিকয় লোক সামষ্টিক চিন্তার প্রতিনিধিত্ব না করলে এবং সবাইকে ধারণের বিশালতা না রাখলে, প্রতিবাদ ন্যায্য। কিন্তু, এ অন্তর্গত ডিনামিজিম যে গণ-অভ্যুত্থানের জন্য ক্যাটালিস্ট ভূমিকা রাখছে, সেটা ভুলে গেলে মবোক্রেসিই চলবে, তর্ক আর সংলাপ সুদূর পরাহত। আপনাকে তো একটা বিন্দু থেকে শুরু করতে হবে!
তিনি আরও বলেন, আমরা কেবল ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নিয়ে নোকতা দিয়েছি, শুরুর বিন্দুগুলো বলেছি। এখন আবার আমরা জনগণের কাছে যাব, আরো বিচিত্র চিন্তাকে একোমডেইট করে কীভাবে সেটাকে রাষ্ট্রকল্পে রিপ্রেজেন্টেড করে তোলা যায়, সে চেষ্টা করব। আমরা ভুলতে চাইনা যে, আমরা নেতৃত্ব ও চিন্তার জায়গাতে ছিলাম, নিজেদের শক্তিতে নয় বরং আপনাদের প্রতিনিধিত্বের শক্তিতে।
তিনি বলেন, আমরা ব্যক্তিমানুষ নশ্বর, এই আছি এই নেই। কিন্তু চিন্তা ও গণচেতনা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটাই আমাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের জীবনীশক্তি তথা আবেহায়াত!
এ গণ-অভ্যুত্থান বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে উল্লেখ করে মাহফুজ আব্দুল্লাহ বলেন, এতে আপনারা আমোদিত, বিহবল- সত্য। কিন্তু এত দ্রুতই কাল্টিজমের দিকে যাইয়েন না। তাইলে আমাদের দীর্ঘ লড়াই বাধাগ্রস্ত হবে। এখন সময় জনগণকে সাথে নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান করার! জনগণই আমাদের মাস্টারপ্ল্যানার!