World wide News

আমরা শিক্ষার্থীদের ওপর চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব: জামায়াত আমির (Latest Update)


জুমবাংলা ডেস্ক : স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনকে চূড়ান্ত বিজয় ভাবার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, বাংলার আকাশে এখনও শকুন উড়ছে। তাই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষা এবং সুশাসন ও ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে আরও বড় ধরনের ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের আরও ত্যাগ শিকার করতে হবে।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত সরকার সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। জামায়াতসহ সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে শেষ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিল। এ অবস্থায় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণ বর্তমান সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে। তাদের কাজ বিগত সরকারের ধ্বংস করা প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামত করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। আমরা তাদের সে সময় দিতে প্রস্তুত।

এ সময় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের আমলে সবার আগে আঘাত এসেছিল বিডিআরের ওপর। সেই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তারা এখনও শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আসেনি। এর মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছিল। এরপর হামলা এসেছে জামায়াতে ইসলামীর ওপর। ইসলাম ধর্মের জন্য যারা নির্যাতন সহ্য করে কাজ করে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ আনা হলো। তাদের আটকের পর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে বিচারবিভাগীয় হত্যাকাণ্ড চালানো হলো। এরপর সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যা করা হলো।’

জামায়াত আমির বলেন, সরকার জামায়াত নিষিদ্ধের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। আমরা তাদের পাতা ফাঁদে পা দেইনি। আমরা ধৈর্য্য ধারণ করেছি ও আল্লাহর সহায়তা চেয়েছি। আল্লাহ আমাদের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন। এক মাস আগে যা কল্পনাও করিনি, সেই উপহার তিনি আমাদের দিয়েছেন।

এ সময় ছাত্র-জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জামায়াত প্রধান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ওপর চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব। তারা এ জাতিকে উদ্ধার করেছেন। এবার নিজেদের গড়তে হবে। তোমাদের প্রতি অনুরোধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে হবে। এটা তোমাদের শেষ আত্মত্যাগ নয়, এটা মাত্র শুরু। জ্ঞান, দক্ষতা অর্জন ও নিজেরা সৎ হতে হবে। একই সঙ্গে অন্যদের সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করতে হবে।

উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সংবাদিকরা ওয়াচ টাওয়ারের মতো। তারা ওপর থেকে সব দেখেন ও জনগণের ভাষা বোঝেন। এ জন্য তাদেরকে জাতির বিবেক বলা হয়। কিন্তু তারা এতদিন মুক্তভাবে কাজ করতে পারেননি। অদৃশ্য ওপরের নির্দেশে তাদের কলম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনটা যেন আর না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকবে হবে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আপনারা আমাদের সমালোচনা করবেন। আমাদের ভুল-ভ্রান্তি তুলে ধরবেন।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে এবং পরিষদের মহানগরী আহ্বায়ক প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে ও পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, পেশাজীবীদের মধ্যে অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান, সাবেক জাজ অ্যাডভোকেট তাহা মোল্লাহ, কর্নেল (অব.) ডা. জিহাদ খান, ইঞ্জিনিয়ার মিসবাহ উদ্দীন খান, ওবাইদুর রহমান, ড. মুফতি মাওলানা আবুল কালাম আযাদ বাশার, মোহাম্মদ মাসুদ কবির প্রমুখ।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা আবুল ইহসান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবিদ হাসান সিদ্দীক, মহানগরী প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার, ডা.আসাদুজ্জামান কাবুল, কৃষিবিদ শেখ মুহাম্মদ মাসউদ, অ্যাডভোকেট মাঈনুদ্দীন, শিল্পী আবিদুর রহমান, সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button