দেশ থেকে প্রতি বছর বিদেশে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ কত? যা জানা গেল (Latest Update)
জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিদেশে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ কত? এমন প্রশ্নের উত্তর মিলছে বৈশ্বিক একটি আর্থিক গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে। সংস্থাটি বলছে, গড়ে প্রতি বছর ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের ছোট্ট এই দেশ থেকে! যার বড় একটি অংশই পাচার হয়েছে তথাকথিত ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে’। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যে করেই হোক পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোই এখন মূল চ্যালেঞ্জ।
গত কয়েক বছর ধরেই ডলার সংকট, ভঙ্গুর অর্থনীতি, মূল্যস্ফিতিসহ নানাবিধা টানাপোড়েনে দেশের অর্থনীতি, যার অন্যতম কারণ অর্থপাচার। বৈশ্বিক বাণিজ্যভিত্তিক কারসাজি, হুণ্ডি, চোরাচালানসহ নানাবিধ পন্থায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে লক্ষাধিক কোটি টাকা।
ওয়াশিংটনভিত্তিক অর্থিক খাতের গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি বছর ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।
শুধু ব্যক্তি উদ্যোগেই নয়, অর্থ পাচার প্রক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়েছে দেশের একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারি- বেসরকারি ব্যাংকও। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে, গেল প্রায় দেড় যুগে দেশীয় ১৯টি ব্যাংকে আত্মসাৎ করা মাত্র ২৪টি ঋণ কেলেঙ্কারির মাধ্যমেই প্রায় একশো হাজার কোটিরও বেশি টাকা, পাচার হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বেশ কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশ বহু দেশের সঙ্গে একাধিক চুক্তি করে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সেইসব চুক্তি এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ জারি রাখতে পারে বর্তমান সরকার।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার করার ক্ষেত্রে আমাদের বিভিন্ন এজেন্সি আছে। বিদেশের সঙ্গেও আমাদের বেশ কিছু নেটওয়ার্ক আছে। তাই সেগুলোও আমাদের ব্যবহার করতে হবে।
বৈশ্বিক পরিসরের উদ্যোগের পাশাপাশি অর্থ ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে দুর্নীতি দমন কমিশনকেও (দুদক)। প্রয়োজনে টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে নিবিড় অনুসন্ধানের তাগিদ দিচ্ছেন আইনজ্ঞরা।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন বলেন, দেশের ভেতরে বা বাহিরে হোক দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করা হলে সেটা উদ্ধার করার সক্ষমতা আছে দুদকের। দ্রুতই যতটুকু সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত, তদন্ত উইংকে শক্ত করে দেয়া, সবাইকে সমন্বিত করে প্রয়োজনে টাস্কফোর্স গঠন করে দেয়া। এতে করে কোনো না কোনোভাবে শনাক্ত যেন করা যায়।
অতীত অভিজ্ঞতা বলে, অর্থ পাচার যতটা সহজভাবে হয়েছে, সেই অর্থ ফিরিয়ে আনা ততটাই কঠিন থেকে কঠিনতর। তারপর আশার কথা হলো, এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার।