World wide News

নৌকায় করে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে পানির দরে (Latest Update)


জুমবাংলা ডেস্ক : অনেকটা পানির দরে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নৌকায় মেঘনা নদীতে ভেসে ভেসে বছরের পর বছর জেলেরা লঞ্চ যাত্রীদের কাছে ইলিশ বিক্রি করছেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌপথে চাঁদপুর লঞ্চঘাট হয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা শখের বসে এসব ইলিশ বেশি কিনছেন। এক্ষেত্রে যাত্রীরা মূলত ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর খ্যাত স্থানে এসে ইলিশ কিনছেন মনে এই ভাবনাটাতেই যেন বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।

শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে ভাসমান নৌকায় জেলেদের ইলিশ বেচা-বিক্রিতে ক্রেতাদের সঙ্গে হাঁকডাকে সরগরম দেখা যায়।

সরজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুরের বড়স্টেশন মাছঘাটসহ আড়তগুলোতে যেখানে ৯শ গ্রামের একটি ইলিশের দাম ১৫শ টাকা বা তার চেয়েও বেশি। সেখানে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নৌকায় করে ভাসমান ইলিশ বিক্রেতাদের থেকে ৯শ গ্রাম বা ১ কেজি ওজনের চারটি ইলিশ ওই একই দামে বা তার চেয়ে সামান্য বেশি দিলেই কেনা যাচ্ছে। এমনকি ৩শ গ্রামের ৭-৮টি ইলিশের দাম ১ হাজার হতে ১৫শ টাকা মাত্র। আর এই সস্তা দামেই সয়লাব সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকও।

স্থানীয়রা জানান, নৌকায় বসে ইলিশ বিক্রি করা চাঁদপুর লঞ্চঘাটের অধিকাংশ জেলেই শহরের বেদে পল্লির। এরা ৪-৫ জনে নৌকা কিনে এই ইলিশ ব্যবসা চালাচ্ছে বছরের পর বছর। কোনো কোনো জেলে বাপ দাদার ব্যবসা হিসেবে এই পেশায় পড়ে রয়েছেন। তারা মূলত পার্টনারশিপে ব্যবসা করলেও দিনপ্রতি বেচাকেনার ওপর হাজিরা হিসেবেই নৌকায় করে ইলিশ বিক্রি করছেন।

মো. সৈকত, মো. আরিফ হোসেন, মো. লিটন, মো. মহসীনসহ আরও কয়েকজন নৌকায় ইলিশ বিক্রি করা জেলের দাবি, তারা চেষ্টা করেন ভালো ইলিশটা বিক্রি করতে। এখন ইলিশের দাম আড়তে বেশি হওয়ায় কখনো কখনো নদী থেকে সরাসরি জেলেদের থেকে তারা ইলিশ কিনে এনে বিক্রি করেন। তারা চেষ্টা করেন সীমিত লাভ করে ইলিশের স্বাদ যাতে সবাই সস্তা দামে নিতে পারে সেদিকে খেয়াল রেখে বিক্রি করতে। এসময় পচা-গলা ইলিশ বিক্রি ও চাঁদপুরের বাইরের ইলিশ এখানে বিক্রি হয় না বলেও তারা জানিয়েছেন।

লঞ্চযোগে ঢাকায় যাবেন মো. আমির। তিনি বলেন, আমি ৯শ থেকে ১ কেজি ওজনের ৮টি ইলিশ কিনলাম মাত্র ৩ হাজার টাকায়। কম দামে তাও আবার চাঁদপুরের ইলিশ এটা ভেবেই মনে আমার খুবই আনন্দ লাগছে।

মো. তাজবির হোসেন নামের আরেক ঢাকাগামী যাত্রী বলেন, আমি দেড় কেজি বা তার চাইতে বেশি ওজনের ৪টি ইলিশ কিনলাম ২৮০০ টাকায়। এখানে পানির দরে চাঁদপুরের ইলিশ পেয়ে মনে শান্তি লাগছে। আমি এই প্রথম চাঁদপুরের ইলিশ কিনে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি। এতে মানসিক একটা তৃপ্তি কাজ করছে।

অন্যান্য ক্রেতারা বলেন, প্যাকেটিং নিয়ে সমস্যা এবং কিছুটা নরম জেনেও চাঁদপুরের ইলিশের লোভ সামলাতে না পেরেই লঞ্চঘাট হতে নৌকায় বসে বিক্রি করা জেলেদের থেকে এসব ইলিশ কিনছি। এতে সময় বাঁচে এবং দামেও কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়। আমরা মূলত চোখের সামনে পড়ায় শৌখিন ইলিশ ক্রেতা

এ বিষয়ে চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, আড়তগুলোতে বরফ গলা ইলিশ ও পচা ইলিশগুলো মণ হিসেবে কম দামে কিনে বেদে জেলেরা নৌকায় করে লঞ্চঘাটে নতুন করে বরফ দিয়ে শক্ত করে বিক্রির অভিযোগ পুরানো। এমনকি পদ্মা মেঘনার রূপালী ইলিশ বলে বিক্রি করা এসব ইলিশ অধিকাংশই চাঁদপুরের স্থানীয় পদ্মা মেঘনা নদীর নয় এমন অভিযোগও রয়েছে। অনেকে ইলিশ কিনে ঢাকাসহ বাসায় গিয়ে ব্যাগ খুলে ইলিশ কাটতে গিয়ে দেখে সব পচা ও নষ্ট ইলিশ। তাই রোদে পুড়ে নৌকায় দীর্ঘসময় বসে থেকে জেলেরা যাতে চাঁদপুরের রূপালী ইলিশের সুনাম নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখে পচনশীল ইলিশ বিক্রির অভিযোগ থেকে বেরিয়ে এসে ব্যবসা করে চাঁদপুরের রূপালী ইলিশের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখে তাদের প্রতি সে অনুরোধ জানাচ্ছি।

কক্সবাজার নার্সিং কলেজের সব শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করলেন শিক্ষার্থীরা

এদিকে বৃষ্টি বা ঝড় তুফান না হলে প্রায় প্রতিদিনই সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চাঁদপুর লঞ্চঘাট হয়ে যাতায়াতকালে নৌকায় ভেসে ভেসে জেলেদের এই ইলিশ বিক্রির দৃশ্য দেখা যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button