World wide News

মায়ের নাম ঠিক রেখে চাচাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আত্মসাৎ (Latest Update)


নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতে কাগজে কলমে মৃত মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে বাবা বানিয়ে ২০১৮ সাল থেকে ভাতা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে ভাতিজা বাবলু হোসেনের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ উঠেছে, ভাতার লোভে নিজের বাবাকে বাদ দিয়ে মায়ের নাম ঠিক রেখে মৃত চাচাকে বাবা বানিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করে আসছে। সোনালী ব্যাংক বাগাতিপাড়া শাখা থেকে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করতেন বাবলু হোসেন (৩৯)।

অভিযুক্ত বাবুল হোসেন বাগাতিপাড়া উপজেলার দায়ারামপুর ইউনিয়নের ডুমরাই (ঢাকাপাড়া) গ্রামের মো. তৈয়ব আলী (৭৭) ও মোছা. জরিনা বেগম (৬০) দম্পতির ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলী শেখ ১৯৭৯ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। সে সময় তিনি অবিবাহিত ছিলেন। তার মৃত্যুর ছয় বছর পর ১৯৮৫ সালে জন্ম হয় বাবলু হোসেনের। অথচ সেই চাচাকে বাবা বানিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৬ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করে আসছে বাবুল হোসেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মো. বাবলু হোসেন এর জন্ম ১৯৮৫ সালে। ২০০৮ সালে ভোটার হন তিনি। জন্ম সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য মতে- ২০০৮ সালে তার বাবার নাম ছিল মো. তৈয়ব আলী এবং মায়ের নাম ছিল জরিনা বেগম। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাওয়ার লোভে ২০১৮ সালে সে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে তার বাবার নাম পরিবর্তন করে চাচা আয়ুব আলী বাবা হিসেবে সংযোজন করে।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি এবং আয়ুব আলী ছোটবেলা থেকেই একই সঙ্গেই লেখাপড়া করেছেন। তারা উভয়েই ভারতের মিত্রবাহিনীর অধীনে ট্রেনিং করেছিলেন এবং ৭ নং সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধও করেছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলী অবিবাহিত অবস্থায় মারা যায়। আয়ুব আলির মৃত্যুর অনেক বছর পরে বাবলু হোসেনের জন্ম হয়। আর বাবলু হোসেন আয়ুব আলির ভাই তৈয়ব আলির ছোট ছেলে।

এ বিষয়ে মো. বাবলু হোসেন জানান, ছোট বেলায় তার চাচা আয়ুব আলী তাকে পালক ছেলে হিসেবে নেন। তার প্রথম জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মদাতা বাবার নাম তৈয়ব আলী ভুল করে দিয়ে ফেলেন। পরে পালক ছেলের বিষয়টি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সহায়তায় নাম তৈয়ব আলীর পরিবর্তে আয়ুব আলী শেখ করেন।

বিকাশের একচেটিয়া ব্যবসা: বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে কীভাবে প্রতারিত করছে?

বাগাতিপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান জানান, বাবলু হোসেনের বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। বাবলু হোসেন জাতীয় পরিচয়পত্র যখন সংশোধন করেন সেই সময় আজাদ হোসেন উপজেলা ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন। তিনিই সেই সময় বাবলু হোসেনের কাগজপত্র সংশোধনে সাহায্য করেন। (সাবেক ডেপুটি কমান্ডার) আজাদ হোসেন আর মুক্তিযোদ্ধা নেই। ২০১৯ সালে তার নামের গেজেট বাতিল হয় এবং ২০২৩ সালে তার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।

আজাদ হোসেনকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তার শরীর খারাপ, কথা বলতে পারছেন না। আর সেই সময় তিনি দায়িত্বে ছিলেন না।

বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনামিকা নজরুল বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত না। কাগজপত্র দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button