সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে রাজধানীর বাসাবাড়িতে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে ‘ডাকাতি’ (গুরুত্বপূর্ণ খবর)
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় তখন কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। এছাড়াও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া এবং থানাগুলো পুলিশ-শূন্য থাকায় এসব ঘটনা অনায়াসে ঘটতে থাকে। তবে সাধারণ মানুষ এবং সেনাবাহিনীর প্রতিরোধে এসব ঘটনা বন্ধ হয় তখন।
তেমনই কয়েকটি ঘটনা ঘটে রাজধানীর কাকরাইল, শাহবাগ এলাকায়। আর এমন তিনটি ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার ২১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে। সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট এবং পরবর্তী সময়ে তিনি এসব ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
একটি পরিবার আটকা পড়লে আমরা তাদের উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম। তখন তারা লোক ভাড়া করে এনে আমাদের ওপর হামলা করে। যেসব অভিযোগ করা হয়েছে—তা সত্য নয়। আমরা এসবের সাথে জড়িত নয়—অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মামুনুর রশিদ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মামুনুর রশিদ এবং তার সহযোগীরা বিভিন্ন বাসায় হামলা চালিয়ে বাসাগুলো থেকে বিভিন্ন দামি জিনিসপত্র, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ দামি জিনিসপত্র নিয়ে যান। এজন্য তারা কোনো বাসায় গেলে শুরুতে সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভেঙ্গে ফেলেন। তারপর তারা হামলা-ভাঙচুর এবং লুটপাট করেন।
গত ৬ আগস্ট রাজধানীর কাকরাইলের কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির ১০তলার একটি বাসায় দলবলসহ যান মামুনুর রশিদ। শুরুতে তারা সেখানকার সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙ্গে ফেলেন। তারপর ১০তলায় থাকা একটি বাসায় হামলা চালিয়ে বাসাটি থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন জিনিস নিতে গেলে তাদের ভবনটির চারতলার লিফটে আটকে ফেলেন সেখানকার বাসিন্দারা। এরপর তাঁদের গণপিটুনি দিয়ে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। এরপর তারা সেখান থেকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান।
আরও পড়ুন: ছাত্রদল নেতাদের নেতৃত্বে ইউজিসিতে ‘ক্যু’, সচিবকে অপসারণ; ফেরানো হয়েছে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িতদেরও
এ ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে সম্প্রতি কথা হয়েছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে। নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, মামুনুর রশিদ এবং তার সহযোগীরা শুরুতে বাসায় এসে সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলেন। তারপর তারা বাসা থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যান।
‘তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি বাসায় এমন কাজে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। শাহবাগে তার কর্মীরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ডাকাতি করতে গেলে তারা ধরা পড়েন। পরবর্তীতে সে অ্যাম্বুলেন্স ছাড়াতে মামুনুর রশিদ থানায় চেষ্টা করেন। আওয়ামী লীগ চলে যাওয়ার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা এসব করলে সামনের নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দলটির ওপর’— যুক্ত করেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ২১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশিদ। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কাকরাইলের ওই বাসায় একটি পরিবার আটকা পড়লে আমরা তাদের উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম। তখন তারা লোক ভাড়া করে এনে আমাদের ওপর হামলা করে। সেনাবাহিনী তখন উদ্ধার না করলে আমরা মারা যেতাম। যেসব অভিযোগ করা হয়েছে—তা সত্য নয়। আমরা এসবের সাথে জড়িত নয়।