শুক্র গ্রহের রহস্যময় আলোর বৈশিষ্ট্য কী? (Latest Update)
শুক্র গ্রহে রাতের অংশে দেখা যায় রহস্যময় রঙিন একগুচ্ছ অনুজ্জ্বল আলোক রশ্মি। ইংরেজিতে এর নাম, অ্যাশেন লাইট। সংক্ষেপে এএল। একে অনেক সময় পৃথিবীর ‘আর্থশাইন’ বা ‘আর্থলাইট’-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়। আর্থশাইন মানে, পৃথিবীর কিনারা ঘেঁষে তৈরি অর্ধ চাঁদের মতো আলোকচ্ছটা। পৃথিবী থেকে দেখা যায় না। তবে মহাশূন্য বা চাঁদ থেকে খুব ভালোভাবে দেখা যায়। মূলত পৃথিবীতে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে তৈরি হয় এই আর্থশাইন। অনেক সময় এ আলোয় আলোকিত হয় চাঁদের অন্ধকার অঞ্চল।
শুক্রের অ্যাশেন লাইটের কথা প্রথম জানা যায় ১৬৪৩ সালে। ইতালীয় জ্যোতির্বিদ জিওভান্নি রিকিওলি সে সময়ে বেশ কবার এই আলো দেখেছিলেন শুক্র গ্রহ দেখার সময়। তবে আলোর উজ্জ্বলতা অনেক কম হওয়াসহ আরও বেশ কিছু কারণে তিনি আর গভীরভাবে এটি পর্যবেক্ষণ করেননি।
অ্যাশেন লাইটের এ ঘটনাকে অনেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভৌতিক গল্প বলেন। কারণ, রহস্যময় এ আলো এখন পর্যন্ত কোনো যন্ত্রের চোখে ধরা পড়েনি, হোক সেটা পৃথিবীতে বসানো মানমন্দির বা মহাশূন্যে ভেসে বেড়ানো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। বিজ্ঞানীরা এটি শনাক্ত করতে পারেননি এখনও। তাহলে জানলাম কী করে এ আলো সম্পর্কে?
আসলে যন্ত্রের চোখে ধরা না পড়লেও মানুষের চোখে ঠিকই দেখা যায় এই আলো। সরল টেলিস্কোপ, পরিষ্কার আকাশ আর আপনি। চেষ্টা করলেই হয়তো নিজ চোখে দেখতে পাবেন রহস্যময় এ আলো। প্রশ্ন হলো, খালি চোখে দেখা গেলে যন্ত্রে কেন দেখা যায় না?
অনেক বিজ্ঞানীই এ ঘটনাকে স্রেফ দৃষ্টিভ্রম বলেন। অনেকে চোখের কন্ট্রাস্ট ইফেক্ট (উজ্জ্বলতার কারণে তৈরি দৃষ্টিভ্রম) কিংবা এক্সপেকটেশন বায়াস (মন যা দেখতে চায়, তাই চোখে ভেসে ওঠা) হিসেবে বর্ণনা করেন। বাকিরা বরং যন্ত্রের সাহায্যে এই ঘটনা দেখতে না পাওয়ার পেছনে যন্ত্রের সীমাবদ্ধতা ও ত্রুটিকে দায়ী করেন। যেমন আলোর বিচ্ছুরণ, বিচ্যুতি, পেছনে আকাশের উজ্জ্বলতা, আবহাওয়াসহ আরও অনেক কিছু।