সৌরজগতের প্রথম গ্রহাণু আবিষ্কারের কৃতিত্ব যার (Latest Update)
সৌরজগতের প্রথম গ্রহাণু আবিষ্কারের কৃতিত্ব ইতালির পালের্মো মানমন্দিরের। গ্রহাণুটির নাম সেরেস। ১৭৯০ সালে ইতালির সিসিলি দ্বীপের রাজধানী পালের্মোতে মানমন্দিরটি স্থাপিত হয়। স্থাপন করেন রাজা প্রথম ফার্দিনান্দ। তত্কালীন দুই সিসিলির জাতীয় মানমন্দির ছিল ওই একটিই। রাজা স্বয়ং এর ব্যয়ভার গ্রহণ করেন।
রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে বারবার আমন্ত্রণ সত্ত্বেও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই দ্বীপে আসতে অস্বীকৃতি জানান। পরে রাজা ফার্দিনান্দ ইতালির মানমন্দিরের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী গুইসেপ পিয়াজ্জিকে।
মানমন্দিরের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিয়াজ্জি প্যারিস ও লন্ডন ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। প্যারিসে তিনি বেশ কয়েকজন বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানীর সান্নিধ্য লাভ করেন। তাঁদের মধ্যে লালাঁদ, মেঁসিয়ের ও ক্যাসিনি অন্যতম। পরে ইংল্যান্ড ভ্রমণের সময় উইলিয়াম হার্সেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানমন্দিরের জন্য ভালো মানের একটি দুরবিন সংগ্রহ করা। শেষে তিনি জেসি রামসেডনের তৈরি একটি প্রতিসরক দুরবিন সংগ্রহ করেন।
সে সময় এই দুরবিনই ছিল সবার সেরা। এটা দিয়েই তিনি ১৮০১ সালে সৌরজগতের প্রথম গ্রহাণু সেরেস (Ceres) আবিষ্কার করেন। পরে প্লুটোসহ সেরেস বামন গ্রহের তালিকায় স্থান পায়। সৌরজগতে এর অবস্থান মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যে গ্রহাণু বেষ্টনী বা অ্যাস্টোরয়েড বেল্ট অঞ্চলে।
সেরেসের ব্যাপারে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন, মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখানে একটি গ্রহ রয়েছে। থাকার কারণ হলো, এই দুই গ্রহের মধ্যে বিশাল ফাঁক বা দূরত্ব। এ নিয়ে কেপলারসহ অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই ভেবেছিলেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। ব্যাপারটি ছিল এ রকম:
আমরা জানি, সূর্য থেকে মঙ্গলের দূরত্ব প্রায় ২৩ কোটি কিলোমিটার। আর বৃহস্পতির দূরত্ব প্রায় ৭৮ কোটি কিলোমিটার। পরপর এ দুটো গ্রহের মধ্যে বিশাল ফাঁক থাকায় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে খটকা লাগে এবং রীতিমতো ভাবতেও শুরু করেন তাঁরা। এরপর ১৭৭২ সালে বোডের সূত্র প্রকাশিত হয়। তখন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা এগিয়ে যায় আরও এক ধাপ। এ সূত্র প্রকাশের ৯ বছর পর ১৭৮১ সালে ইউরেনাস গ্রহ আবিষ্কৃত হয়।
গ্রহটি আবিষ্কার করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্সেল। এর দূরত্ব নির্ণয় করে পাওয়া যায় ১৯ দশমিক ১ একক। আর বোডের সূত্রমতে ১৯ দশমিক ৬ একক। এরপর বিজ্ঞানীরা বোডের সূত্র গ্রহণ করে নিলেন। কিন্তু সূত্রমতে ২ দশমিক ৮ সংখ্যাটির কোনো হদিস পাওয়া গেল না। ফলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা উঠে পড়ে লাগলেন গ্রহটিকে খুঁজতে।