World wide News

নতুন জীবন পেল প্রাচীন মিসরীয় কফিন (Latest Update)


আন্তর্জাতিক ডেস্ক : “তারা এর বাজে অবস্থা থেকে একে পুনরুদ্ধার করতে পারবে কি না, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান ছিলাম।” বহু দশক ধরে সংস্কার কাজ চালানোর পর অবশেষে উদ্ধার হয়েছে এক প্রাচীন মিশরীয় কফিন।

অনুমান বলছে, প্রত্নতাত্ত্বিক কফিনটি খ্রিস্টপূর্ব ৬৫০ সালের, যা নিয়ে কার্ডিফ ইউনিভার্সিটিতে হাজার হাজার ঘণ্টা ধরে সংস্কার কাজ করার পর এখন সেটি ফিরে এসেছে সোয়ানসি ইউনিভার্সিটি’র ‘ইজিপ্ট সেন্টার’-এ।

কফিনটি মূলত গ্রিক শহর থিবসের ‘আনখপাখেরেড’ নামের এক ব্যক্তির জন্য তৈরি হয়েছিল, যা সংস্কারের পর সেন্টারের কিউরেটর ড. কেন গ্রিফিনের সতর্ক নজরদারিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

সেন্টারের কর্মীরা এ পুরোদস্তর প্রকল্পকে ‘কল্পনাতীত’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

ড. গ্রিফিন বলেন, “কফিনের আরও অবনতি ঠেকাতে একে পরিষ্কার, পুনর্গঠিত ও সমন্বিত করতে হয়েছে। আর আমরা একে আবারও ফিরে পেয়ে রোমাঞ্চিত।”

“১৯৯৭ সালে ওয়েলশের ‘অ্যাবারিস্টুইথ ইউনিভার্সিটি’ থেকে আমরা এটি উপহার হিসেবে পেয়েছিলাম। তবে, এর ইতিহাসের বিস্তারিত তথ্য কিছুটা ঘোলাটে।”

“এমনকি এটি একসময় স্টোরেজ বক্স হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে, যার ভেতরে অন্যান্য মিশরীয় বস্তু সংরক্ষণ করা হতো।”

আর কফিনটি ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে যারা একে সাবধানে খুলেছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন জাদুঘর ব্যবস্থাপক ওয়েন্ডি গুডরিজ, যিনি কার্ডিফ ইউনিভার্সিটি’র ‘স্কুল অফ হিস্ট্রি, আর্কিওলজি অ্যান্ড রিলিজিয়ন’ বিভাগে কফিনটি এনেছিলেন।

“এর যে বাজে অবস্থা ছিল, সেখান থেকে তারা একে পুনরুদ্ধার করতে পারবে কি না, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান ছিলাম।”

“তবে এখন দেখে মনে হচ্ছে, কঠোর পরিশ্রমের পর একে খুবই ভালোভাবে পুনরুদ্ধার করা গেছে, যা আমাদের জন্য কল্পনাতীত ছিল। আর অবশ্যই এ অপেক্ষা বিফলে যায়নি।”

কার্ডিফে থাকাকালীন বেশ কিছু সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষার্থী প্রজন্ম কফিনটির সংস্কার কাজে হাত দিয়েছিলেন।

ইউনিভার্সিটি’র জ্যেষ্ঠ সংরক্ষক ফিল পার্কসের ব্যাখ্যানুসারে, কাঠের কফিনটি বোনা কাপড়ে আবৃত ও এর ওপর সজ্জিত প্লাস্টারের একটি পাতলা স্তরও ছিল।

“ওই বোনা কাপড়ের বেশিরভাগ অংশই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছিঁড়ে গেছে ও কাপড়টি স্রেফ ঝুলে ছিল,” বলেন তিনি।

“এর আলাদা কাঠের মাথাটি কফিন থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল ও এর মধ্যে কাঠের দুটি বড় টুকরা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মূল ভিত্তির একটি পাশও ভেঙে গিয়েছিল ও সামগ্রিকভাবে খুবই বাজে অবস্থায় ছিল এটি।”

“শিক্ষার্থীরা একে এমন পর্যায়ে ফিরিয়ে এনেছেন, যেখানে গোটা কফিনই এখন স্তিতিশীল অবস্থায় আছে ও এটি প্রদর্শনীতেও যাওয়ার উপযুক্ত এখন।”

বর্তমানে মেরামত করা এ কফিনে মিসরীয় দেবতাদের উজ্জ্বল রঙের চিত্র ও পরকালের বার্তা বহন করা বিভিন্ন চিত্রলিপির বর্ণমালাও স্পষ্টভাবে দেখা যায়, যার ফলে মিসরবিষয়ক প্রত্নতাত্ত্বিকরা এর ইতিহাস আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ পাবেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

এর ঢাকনার ওপরের বিভিন্ন সংকেত থেকে ইঙ্গিত মেলে, পরবর্তীতে এটি আরেকজন মানুষের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল, যার নাম ছিল ‘জেডার’।

তবে, গত শতাব্দির শেষ নাগাদ কফিনটি যখন যুক্তরাজ্যে পৌঁছায়, তখন আসলে এতে একজন নারীর মমি ছিল।

অনুমান বলছে, সে সময়কার আগ্রহী ব্রিটিশ সংগ্রাহকদের কাছে কফিনটির মূল্যমান বাড়ানোর জন্য হয়ত ওই দেহকে কফিনের ভেতর ঢুকানো হয়েছিল।

৫% সুদে ৩০ লাখ টাকা লোন, কিস্তি শুরু দেড় বছর পর

কফিনটি এখন সংরক্ষাণাগারে থাকলেও একে ইজিপ্ট সেন্টারের ‘হাউজ অফ ডেথ’ গ্যালারিতে প্রদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button