ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কিডনি বিক্রি (Latest Update)
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাতে নিজেদের কিডনি বিক্রি করে দিচ্ছেন মিয়ানমারের দরিদ্র অসহায় মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে খুঁজছেন ক্রেতা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের অনুসন্ধানে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ভারতীয় কিছু এজেন্টের মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করছে তারা।
গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত মিয়ানমারের অসহায় ও দরিদ্র মানুষের এখন এমন নির্মম ভাগ্যের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ যেন। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করতে করতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে তাদের। এমনই একজন ভুক্তভোগী মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরে কর্মরত এক নারী।
১৮ বছর বয়সে নার্স হওয়ার স্বপ্ন বুকে নিয়ে ইয়াঙ্গুনে পাড়ি জমান তিনি। তবে গার্মেন্টস শ্রমিকের যৎসামান্য আয় ও দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকটে, জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া মূল্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছিলেন না তিনি। এরমধ্যে, তার খালার ক্যানসারের চিকিৎসা চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় ফেসবুকের একটি গ্রুপে নিজের রক্তের গ্রুপ ও বয়স জানিয়ে কিডনি বিক্রির পোস্ট দেন।
নিজের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ বিক্রির এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, দারিদ্রের কষাঘাতে কোনো উপায় না পেয়েই তার এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এমনও দিন গেছে যেদিন সারাদিন কিছু খাওয়ার সুযোগ হয়নি। বাধ্য হয়ে তাই খালার জীবন বাঁচাতে এই সিদ্ধান্ত।
এমন পরিস্থিতির শিকার ওই নারীর মতো দেশটির অজস্র মানুষ। নিজের জীবন বিপন্ন করে পরিবার-পরিজনের জন্য দুবেলা অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থা করতে কিডনি বিক্রি করছেন।
সিএনএনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এমন বেশ কয়েকটি গ্রুপ আছে যেখানে কেউ চাইলে নিজের কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিতে পারে। এরপর কিছু এজেন্টের মাধ্যমে ভারতের বাজারে তা বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়।
যদিও উভয় দেশেই কিডনি বেচাকেনা অবৈধ। এরপরও জীবিকার তাগিদে উপায় না পেয়ে এই পথে পা বাড়াচ্ছেন তারা। ফেসবুক গ্রুপে অঙ্গ বিক্রির বিষয়টি মেটার নজরে আনা হলে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এ ধরনের সব গ্রুপ এরই মধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
গৃহযুদ্ধের কবলে বিপর্যস্ত মিয়ানমারের অর্থনীতি। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি) জানায়, দেশটির সাড়ে ৫ কোটি মানুষের প্রায় অর্ধেক বাস করে দারিদ্রসীমার নিচে। এ ছাড়াও, বিভিন্ন দলের ক্ষমতার লড়াইয়ে বিদেশি আয় কমার পাশাপাশি চরমে উঠেছে বেকারত্ব। এতে জীবনযাত্রার মৌলিক চাহিদা মেটাতে গিয়েই নাজেহাল অসহায় দরিদ্র মানুষ। কোনো উপায় না পেয়ে তাই তাদের পা বাড়াতে হচ্ছে নিজের অঙ্গ বিক্রির পথে।
ফের রিমান্ডে টুকু-পলক-সৈকতসহ ৫ জন