World wide News

অন্যকে হাই তুলতে দেখলে আমাদের হাই আসে কেন? (Latest Update)


মনোযোগ দিয়ে কাজ করছেন। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই, আচমকা ইয়া বড় হাঁ করে টেনে নিলেন প্রচুর বাতাস। এই বাতাসের গন্তব্যস্থল ফুসফুস। আলজিহ্বা দেখা যেতে পারে, এই চিন্তায় ঝপ করে হাত দিয়ে মুখটাকে আড়াল করলেন। কয়েক সেকেন্ডেই শেষ হলো পুরো কার্যক্রম। হঠাৎ মুখ খুলে প্রচুর বাতাস টেনে নেওয়ার এই বিষয়টিকে বলা হয় হাই তোলা।

বিরক্তি, ক্লান্তি বা ঘুম থেকে ওঠার পর সাধারণত হাই আসে। বিজ্ঞান বলে, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলে সেটা পূরণ করে নিতেই হাই তোলে মানুষ। শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো হাই তোলার জন্যও আমাদের আলাদা করে চিন্তা করতে হয় না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়। নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড বায়োবিহাভিয়েরাল রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত ২০১৭ সালের এক গবেষণাপত্র বলছে, বেশির ভাগ মানুষ দিনে মোটামুটি ৬ থেকে ২৩ বার হাই তোলেন। শুধু মানুষই না, জল-স্থলের অনেক প্রাণীও হাই তোলে।

মজার বিষয় হলো, কোনোরকম শারীরিক প্রয়োজনীয়তা ছাড়াও অন্যকে হাই তুলতে দেখলেই অনেক সময় হাই তোলে মানুষ। একটু খেয়াল করে এটা দেখতে পাবেন আপনার আশপাশেই। কেন?

অন্যকে হাই তুলতে দেখে আমরা যে হাই তোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি, সেটাকে বলা যায় সংক্রামক হাই তোলা। ইংরেজিতে কন্টেজিয়াস ইয়নিং (Contagious Yawning)।

সাধারণভাবে হাই ওঠার মতো অন্যকে দেখে হাই তোলার প্রবণতাকেও দেহের স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া মনে হতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা একে স্বয়ংক্রিয় বলতে রাজি নন। কারণ জন্ম থেকে এই স্বভাব আমাদের মধ্যে থাকে না।

‘হোয়াই কন্টেজিয়াস ইয়নিং ডাজ নট (ইয়েট) ইকুয়েট টু এম্প্যাথি’ শিরোনামের ওই গবেষণাপত্র বলছে, ৪ থেকে ৫ বছর বয়সে শিশুদের মধ্যে সংক্রামক হাই তোলার বিষয়টি শুরু হয়। মজার বিষয় হলো, এ সময়েই শিশুর মাঝে এম্প্যাথি বা সহানুভূতি তৈরি হতে শুরু করে। সহানুভূতির অর্থ অন্যের অনুভূতি বুঝতে পারা এবং তা ভাগাভাগি করে নিতে পারা। তাই এ সময় চিন্তাভাবনা ছাড়াই অন্যের হাই তোলা দেখে নিজের মধ্যে হাই তোলার প্রবণতা তৈরি হতে শুরু করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, পরিচিত মানুষকে হাই তুলতে দেখলে হাই তোলার প্রবণতা বাড়ে। অর্থাৎ অপরিচিত কাউকে হাই তুলতে দেখলে আপনার যতটা না হাই তুলতে ইচ্ছা হবে, তার চেয়ে অনেক বেশি হাই তুলতে ইচ্ছে করবে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের কাউকে হাই তুলতে দেখলে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button