Latest News

উচ্চশিক্ষায় গন্তব্য হতে পারে স্পেন, যেসব বিষয় জানা জরুরি (গুরুত্বপূর্ণ খবর)

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর উচ্চশিক্ষার জন্য অসংখ্য শিক্ষার্থী ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমাচ্ছে।   তার মধ্যে অন্যতম একটি দেশ হচ্ছে স্পেন। স্পেন এমন একটি দেশ, যে দেশে আপনি খুব স্বল্প খরচে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। এখানে জীবনযাত্রা নির্বাহে খুব বেশি টাকা লাগেনা বিধায় আপনি সহজে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বেছে নিতে পারেন এই দেশকে।

স্পেনে উচ্চশিক্ষার আনুমানিক খরচ
* পড়াশোনা: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছরের খরচ ৬ লাখ থেকে ১৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছরের খরচ ৫ লাখ থেকে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত।
* বাসস্থান ও আনুষঙ্গিক: ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থাকলে আরও কম হবে।

উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন
স্পেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও গবেষণামূলক কোর্সে ভর্তির আবেদন বছরের বিভিন্ন সময় গ্রহণ করা হয়। স্পেনে সাধারণত প্রতিবছর অক্টোবর থেকে শিক্ষাবছর শুরু হয়। তাই প্রতিবছর অক্টোবরের আগেই বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির আবেদন গ্রহণ করা হয়। ভর্তির আবেদনের সময় মোটামুটি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই সময়ে শুরু হয়।

সরকারি স্কলারশিপের সুযোগ
স্পেনে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশে সরকারি বৃত্তির জন্য আবেদন করা যায়। বিভিন্ন দেশের সরকারি বৃত্তির সুযোগের খোঁজ পাওয়া যাবে www.shed.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে। সরকারি বৃত্তি পেতে স্নাতক পর্যায়ে ভালো ফল ও গবেষণা প্রবন্ধের প্রকাশনাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। যারা মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়তে চান, তাদের জন্য কাজ ও গবেষণার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় বেশি। কোনো কোনো বৃত্তির ক্ষেত্রে ভাষাগত দক্ষতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়তে অনেক ক্ষেত্রে চাকরির অভিজ্ঞতা, গবেষণা ও সৃষ্টিশীল কাজকে মূল্যায়ন করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ভালো মোটিভেশন লেটার, সিভি ও বৃত্তির সময় দেওয়া সাক্ষাৎকারের পারফরম্যান্সও বৃত্তি পাওয়ার জন্য সহায়ক হয়।

অন্যান্য বৃত্তি
স্পেনে প্রতিবছর অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাসে ইরাসমস বৃত্তির জন্য আবেদন করা যায়। স্নাতক শেষ বর্ষে থাকা অবস্থায়ও আবেদনের সুযোগ আছে। বৃত্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রতি মাসে ১ হাজার ৪০০ ইউরো পায়। বছরে তিন হাজার ইউরো ভ্রমণ খরচ, এককালীন এক হাজার ইউরোসহ বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন খরচ ও গবেষণা খরচ পেয়ে থাকে।

আইইএলটিএস স্কোরের গুরুত্ব
সাধারণত আবেদনের জন্য গড় স্কোর ৬.৫ থাকলে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যায়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস ছাড়াই আবেদন করা সম্ভব। আবার কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্প্যানিশ ভাষাশিক্ষার সনদ চায়। স্থানীয় ভাষায় দক্ষতা তৈরি করতে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই কোর্সের সুযোগ থাকে। স্প্যানিশ ভাষার আন্তর্জাতিক দক্ষতা সনদ ডিইএলই স্কোর থাকলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ভর্তির সুযোগ থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশিক্ষা কেন্দ্রে স্প্যানিশ শেখার সুযোগ আছে।

উচ্চশিক্ষার জন্য স্পেন যেতে যা জানা প্রয়োজন

জীবনযাত্রার ব্যয়
জীবনযাত্রার ব্যয় নির্ভর করে শহরের ওপর। স্পেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়বেন, মাদ্রিদ বা বার্সেলোনায় থাকলে তাদের মাসে ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ ইউরোর মতো খরচ হবে। সেভিল, কাদিজ বা ভ্যালেন্সিয়ার মতো শহরে থাকলে খরচ পড়বে ৭০০-৯০০ ইউরো। ওভিয়েডোতে পরিবেশ ভালো। বাসাভাড়া কমবেশি ৩০০ ইউরো। খাবার খরচ মাসে প্রায় ২০০ ইউরোর মতো। ১ হাজার ইউরো হাতে থাকলে মোটামুটি আরামে মাস চলে যায়।

স্কলারশিপ ছাড়া পড়ার খরচ
স্পেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি অন্যান্য দেশের চেয়ে কম। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য খরচ পড়বে ৭৫০ থেকে ২ হাজার ৫০০ ইউরো। আর মাস্টার্সের জন্য খরচ পড়ে ১ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ ইউরো। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ আরও বেশি।

পড়ালেখার মান
স্পেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, গণিত, জীববিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা পড়তে যান। গবেষণার সুযোগ এখানে বিস্তৃত। প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ই বিশ্বমানের। রয়েছে ক্লাস, ল্যাব, প্রেজেন্টেশন, সেমিনার ও প্রজেক্ট ওয়ার্ক।

আরও পড়ুন: স্কলারশিপে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, থাকছে ১৪ লাখ টাকা

পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ
স্পেনে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ আছে, তবে সেটা নির্ভর করে শহর আর ভাষাদক্ষতার ওপর। বড় শহরে না থাকলে কিংবা ভাষা না জানলে কাজ পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। স্পেনে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার মতো কাজের সুযোগ পান আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। মাসে কমবেশি ৪৫০ ইউরো আয়ের সুযোগ থাকে।

পড়ালেখা শেষে চাকরির সুযোগ
স্পেনে পড়াশোনা শেষে নানা ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ আছে। পড়াশোনা শেষ করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা দুই বছর চাকরি করতে পারেন। বার্সেলোনার মতো বড় শহরে স্প্যানিশ ভাষা না জানলেও চাকরির সুযোগ পাবেন। কিন্তু অন্যান্য শহরে চাকরির সুযোগ পেতে স্প্যানিশ জানা বেশ জরুরি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজের পাশাপাশি ব্যাংক, প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ও গবেষণা সংস্থায় কাজের সুযোগ আছে। স্পেনে অন্যান্য দেশের চেয়ে বেকারত্বের হার বেশি, তাই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাজের প্রতিযোগিতা বেশি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button