Islamer Bani

কুরবানি কার নামে করতে হবে? | কুরবানী করা কি ওয়াজিব নাকি সুন্নত?

কুরবানি কার নামে করতে হবে? |কুরবানী করা কি ওয়াজিব নাকি সুন্নত?

আসসালামু আলাইকুম সম্মানিত পাঠকবৃন্দ সবাইকে আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাগতম। প্রিয় পাঠক আসা করি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। বন্ধুরা বর্তমান সময়ে আমরা যে কোন তথ্যের জন্য গুগলে সার্চ করে থাকি। তাই ভিবিন্ন ধরনের পিক ডাউনলোড করতে আমাদের গুগলের সাহায্য নিতে হয়।


প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কুরবানি কার নামে করতে হবে? কুরবানী করা কি ওয়াজিব নাকি সুন্নত? আপনি এই সমস্ত ছবি হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম বা অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবহার করতে পারেন।  আমাদের সংগ্রহে আছে কোরবানি সম্পর্কে কিছু বানী। আমি আশা করি এই ছবিগুলো আপনার প্রোফাইল পিকচার হিসেবে ব্যবহার করতে কাজে লাগবে। তাই দেরি না করে ডাউনলোড করুন আপনার পছন্দের ছবি।

কুরবানি কার নামে করতে হবে?

কোরবানি শব্দের আভিধানিক অর্থ ত্যাগ, আত্মোৎসর্গ; নৈকট্য লাভ। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় কোরবানি হলো, জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা। 


এদিকে পশু জবাইয়ের আগে অনেককে অংশীদারদের নাম বলতে দেখা যায়। কিন্তু কোরবানির সময় কোরবানিদাতাদের নাম উল্লেখ করা জরুরি নয়। কেননা কার পক্ষ থেকে পশু কোরবানি করা হচ্ছে, সেটি তো পশু কেনার সময়ই নির্ধারিত হয়ে যায়।


অর্থাৎ কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে দেখা হবে মালিকানা কাদের। পশুতে যার যার মালিকানা আছে, তারা যাদের নামে কোরবানি আদায়ের নিয়ত করবেন তাদের নামেই কোরবানি হবে। 


পশু জবাইয়ের সময় কোরবানিদাতাদের নাম উল্লেখ করাও সুন্নত নয়। কেননা রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরবানির পশু জবাই করার সময় কার পক্ষ থেকে কোরবানি হচ্ছে তার নাম মুখে উল্লেখ করেননি। তিনি কোরবানির পশু জবাই করার সময় মুখে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বলেছেন। 


তবে কুরবানির আগে নিশ্চিত হওয়ার জন্য নামগুলো পাঠ করা যেতে পারে, তবে এটি জরুরি বা সুন্নত হিসেবে নয়। এভাবে উল্লেখ করলেও হবে যে, আমরা অমুক বলছি, আমাদের কোরবানি কবুল করুন, অথবা সবার তরফ থেকে কোরবানি কবুল করুন। (সহীহ বুখারী-৫৫৫৮, সহীহ মুসলিম -১৯৬৬)


কুরবানী করা কি ওয়াজিব নাকি সুন্নত?

কুরআন,সুন্নাহ এবং ইজমায়ে উম্মতের আলোকে কুরবানির বৈধতা প্রমাণিত। হাদিস শরীফে এসেছে যে, ‘নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরতের পর যখন থেকে কুরবানি করা শুরু করেন, তারপর থেকে আর কখনো বাদ দেননি। অর্থাৎ কোনো ঈদুল আজহার সময় কুরবানি না করে থাকেননি।  (জামে তিরমিযী ১/১৮২)


কুরবানি কি সুন্নত নাকি ওয়াজিব? এ বিষয়ে  মুজতাহিদ ফকিহদের মাঝে দু’টো মত রয়েছে।


প্রথম মত: সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর কুরবানি ওয়াজিব। ইমাম আওযায়ি, ইমাম লাইস, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) প্রমুখের মত এটা। আর এর উপরই হানাফী মাজহাবের ফতোয়া। আর ইমাম মালিক ও ইমাম আহমদের একটি মতেও কুরবানি ওয়াজিব। ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) এর মতেও কুরবানি করা ওয়াজিব।


দ্বিতীয় মত: কুরবানি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বা অত্যন্ত তাকিদপূর্ণ সুন্নাহ। এটা ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ, ইবনে কুদামা, ইবনে হাযম রহিমাহুমুল্লাহ প্রমুখসহ একদল ফকীহদের মত। আর এক বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম মালিকের মতেও সুন্নতে মুয়ায়াক্কাদাহ। 


কিন্তু এ মতের প্রবক্তারা আবার বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি পরিত্যাগ করা মাকরুহ। যদি কোন জনপদের লোকেরা সামর্থ্য হওয়া সত্ত্বেও সম্মিলিতভাবে কুরবানি পরিত্যাগ করে তবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে। কেননা, কুরবানি হলো ইসলামের একটি শিয়ার বা বৃহৎ নিদর্শন।  (আহকামুল উদহিয়্যাহ, পৃ.214 )


কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে এ ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহ একমত যে, কুরবানির দিনগুলোতে যথাসম্ভব কুরবানি করা জরুরি এবং এর সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি না দেওয়া অন্যায়। কেননা নবী করিম সা.এর ভাষ্যমতে কুরবানির দিনগুলোতে কুরবানির রক্ত প্রবাহের চেয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছে অধিক প্রিয় কোন আমল নেই।


জাওয়াহিরুল ইকলিল শরহু মুখতাসারে খালিল গ্রন্থে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে যে,যদি কোনো শহরের সমস্ত লোক কুরবানি ছেড়ে দেয় তবে তাদের সাথে যুদ্ধ করা হবে। কেননা কুরবানি ইসলামের শিআর। (রাসায়িলে ফিকহিয়্যা লিশ শায়খে ইবনে উসাইমিন রহিমাহুল্লাহ ৪৬,আহকামুল উদহিয়্যাহ, ইবনে উসাইমিন পৃ.214 )


কুরআন-সুন্নাহে কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার দলিলসমূহ।

আমাদের নবী, ইনসানিয়াতের রাহবার হজরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে কুরবানি করেছেন, মানুষকে কুরবানী করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

 

• হাদীসে স্পষ্ট বলা হয়েছে- সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কুরবানী করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৩১২৩; সুনানে দারাকুতনী, হাদীস ৪৭৪৩ [হাদীসটি ‘মারফ‚’ ও ‘মাউক‚ফ’ উভয়ভাবে বর্ণিত হয়েছে। 


প্রখ্যাত হাদীসবিষারদ যফর আহমাদ উসমানী রাহ.-সহ বহু মুহাদ্দিস উভয় বর্ণনাকেই ‘সহীহ’ বলেছেন। আর হাদীসের শব্দ ও মর্ম  দেখেও তা ‘মারফ‚’ বলেই মত প্রকাশ করেছেন। (ইলাউস সুনান, খ. ১৭, পৃ. ২১২-২২৫)]


• হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত- হজরত জাবের (রা.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনাতে ঈদের নামাজ পড়িয়েছেন। কিছু লোক নামাজের পূর্বেই কুরবানি করে ফেলেছেন এ ধারণায় যে, হয়তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালামও কুরবানি করে ফেলেছেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিলেন যারা নামাযের পূর্বে কুরবানি করেছে তারা অবশ্যই পূনরায় কুরবানি করতে হবে। তোমরা কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূর্বে কুরবানি করবে না। (সহীহ মুসলিস-১৯৬৪)


কুরবানি যদি ওয়াজিব না হয়ে সুন্নত-ই হতো, তাহলে তো পূনরায় কুরবানির নির্দেশ দিতেন না। 


















Tag:-কুরবানি কার নামে করতে হবে? | কুরবানী করা কি ওয়াজিব নাকি সুন্নত?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button