ফিতরার পরিমাণ ২০২০ | ফিতরা কাদের উপর ফরজ(সকল প্রশ্নের উত্তর) | ফিতরা আদায়ের নিয়ম
ফিতরার পরিমাণ ২০২০ | ফিতরা কাদের উপর ফরজ(সকল প্রশ্নের উত্তর) | ফিতরা আদায়ের নিয়ম
ফিতরা বা সাদকাতুল ফিতর
ফিতরা কেন দিবেন?
কারা ফিতরা দিবেন?
কী পরিমাণ সম্পদ থাকলে ফিতরা দেয়া ফরয হয়?
(ক) আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বাধীন, কৃতদাস, নারী, পুরুষ, ছোট, বড় প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি রমাযানের সিয়ামের কারণে এক সা‘আ খেজুর বা এক সা‘আ যব ফিত্রা হিসেবে ফরয করে দিয়েছেন। (বুখারী : ১৫০৩; মুসলিম : ৯৮৪)
(খ) আহমাদের একটি বিশুদ্ধ হাদীসে আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে,
فِيْ زَكَاةِ الْفِطْرِ عَلَى كُلِّ حَرٍّ وَعَبْدٍ ذَكَرٍ وَأُنْثَى صَغِيْرٍ أَوْ كَبِيْرٍ فَقِيْرٍ أَوْ غَنِىٍّ صَاعًا مِنْ تَمَرٍ
প্রত্যেক স্বাধীন, পরাধীন, নারী, পুরুষ ছোট, বড়, ফকীর-ধনী, প্রত্যেকের উপর জনপ্রতি এক সা‘আ (২ কেজি ৪০ গ্রাম) পরিমাণ খেজুর ফিত্রা হিসেবে দান করা ওয়াজিব।
তবে ইমাম আবূ হানীফার (রহ.) মতে ঈদের দিন যাকাতের নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে অর্থাৎ ঐদিন ভোরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত হিসেবে যার ঘরে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা এর সমপরিমাণ নগদ অর্থ থাকবে শুধু ঐ পরিবারের উপর ফিত্রা দেয়া ফরয হবে।
ফিতরার পরিমান ২০২০ |২০২০ সালের ফিতরা কত টাকা
প্রতি বছর ইসলামি ফাউন্ডেশন ফিতরার পরিমান কত টাকা তা প্রকাশ করে থাকে ফিতরার পরিমান ২০২০ সালে কি পরিমান তা ইসলামি ফাউন্ডেশন প্রকাশ করেছে।বিস্তারিত তাদের দেওয়া পিকচার এ পড়ুন।
ফিতরা কখন দিতে হয়
কাদের উপর ফিতরা ওয়াজিব
যে দরিদ্র ব্যক্তি ফিত্রা গ্রহণ করবে সেও কি তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ফিত্রা প্রদান করবে?
ফিতরা কিভাবে আদায় করবেন?
কিন্তু সঠিক কতটাকা কিভাবে পরিমাপ করবেন সবকিছু আপনার জানা প্রয়োজন। তবেই আপনি কি ফিতরা স্বতঃফূর্তভাবে আদায় করতে পারবেন। আল্লাহর উদ্দেশ্যে এই রোজা রাখা। এর ভুল-ত্রুটি মুক্ত কিভাবে করা যায় আদায় করার জন্য সঠিক নিয়মটা জানা প্রয়োজন।
(ক) স্থানীয়ভাবে উৎপন্ন হয় এমন পণ্য যা সহজেই পাওয়া যায় তার পরিমাপ হবে ১ সাঁ। অর্থাৎ ১ সাঁ পরিমাপ হবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা ৩,৩০০ গ্রাম।
(খ) বিদেশি পণ্য যা আমদানির মাধ্যমে দেশে আনা হয় তার পরিমাণ অর্ধ সাঁ। অর্থাৎ সাঁ পরিমাপ হবে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা ১,৬৫০ গ্রাম।
রসূল পাক (সঃ) এর জমানায় খেজুর, কিশমিশ, মুনাক্কা, যব, এসব সে দেশীয় স্থানীয় পণ্য যা ১ সাঁ পরিমাণ ফিত্রা আদায় করতেন। গম, আটা, চাল, এসব ছিলো আমদানিকৃত পণ্য। সে কারণে এ সব পণ্য অর্ধ সাঁ হিসাবে পরিমাপ করে ফিত্রা আদায় করতেন।
কিন্তু আমাদের হুবহু তা করলে হবে না। স্থানীয় পণ্য-আমদানি পণ্য কি কি বুঝতে হবে। চাল, গম, আটা আমাদের দেশিয়-স্থানীয় পণ্য সে কারণে এসব শস্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হলে পুরা ১সাঁ বা ৩,৩০০ গ্রাম আদায় করতে হবে। চাল দিয়ে হিসাব (সোজা হিসাব) সচরাচর আমরা প্রতিদিন যে চাল খেয়ে থাকি তার ওজন বা বাজার মূল্য নির্ধারণ করে ফিতরা আদায় করবেন। তার বাজার মূল্য যদি ৪০/- টাকা হয় তা হলে ৩,৩০০ গ্রাম চালের মূল্য ১৩২/- টাকা। এই ১৩২/- টাকা হলো আপনার সঠিক ১টা ফিতরা।
আপনি যদি আমদানি পণ্যতে ফিতরা আদায় করতে চান তাহলে খেজুর দিয়েই বলি- বর্তমানে শুকনা খেজুর মূল্য কেজিতে ১২০/- টাকা। তার অর্ধেক সাঁর ওজন ১,৬৫০ গ্রাম যার মূল্য ১৯৮/- টাকা।
মূল্যের তারতম্য হওয়ার কারণে কিছু টাকা বেশি আদায় করা উত্তম। যারা গরিব তাদের উপর ফিতরা আদায় করাও জরুরি। রোজার দোষ প্রুটি মুক্ত হওয়া প্রয়োজন। এই ফিতরা আদায়ও নিয়ম ভিন্ন। গরিব আপনি যে চাল খান তার ৩,৩০০ গ্রাম চালের একটা ফিতরা জোগাড় করে পরিবারের সদস্যদের মাঝে ১ জন অন্যজনকে বলবে আমার ফিতরাটা তোমাকে দিলাম তুমি গ্রহণ করো। সে তার ফিতরা টা অন্যজনকে দিয়ে বলবে আমার ফিতরাটা তোমাকে দিলাম তুমি বুঝে নিলেতো? এভাবে হাত বদল করে করে টাকাটা ঘরে রেখে দিবে। পরবর্তীতে তা কোন প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করতে পারবে।
খাদ্যদ্রব্য না দিয়ে এর বদলে টাকা পয়সা দিয়ে কি ফিত্রা দেয়া জায়েয হবে?
ফিতরা দেওয়ার গুরুত্ব
আল্লাহতায়ালা রোজাদারের প্রতিদান (পুরস্কার) নিজের হাতেই দান করবেন ঘোষণা দিয়েছেন। সেই রোজাকে ত্রুটি মুক্ত করতে ফিতরা বিধান। আমরা ধনী-গরীব সকলেই এই ফিতরা আদায় করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য তৎপর হবো। আল্লাহ আমাদের তৈৗফিক দান করুন। আমীন।